করোনা ভাইরাসের প্রকোপ মোকাবেলায় অনেক আগে থেকেই মানুষদের পাশে দাঁড়িয়েছেন বাংলাদেশের ক্রিকেটাররা। জাতীয় ক্রিকেট দল দলীয় ভাবে দান করার পাশাপাশি অনেক ক্রিকেটার ব্যক্তিগত উদ্যোগেও পাশে দাঁড়িয়েছেন। এবার কর্মক্ষম মানুষদের জন্য উপহার পাঠালেন জাতীয় দলের ক্রিকেটার মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ।
নিজ শহর ময়মনসিংহের খেটে খাওয়া ১৩৩টি পরিবারের কাছে জাতীয় দলের টি-টোয়েন্টি অধিনায়কের পক্ষ থেকে খাদ্য সহায়তা ‘উপহার’ হিসেবে পাঠানো হয়েছে। উপহার পৌঁছে দেয়ার কাজ করছে স্থানীয় একটি সংগঠন’ ব্রহ্মপুত্র ব্লাড কল্যাণ সোসাইটি’ । এতদিন অসুস্থ রোগীদের বিনামূল্যে রক্ত দিয়ে সেবা দান করে আসা সংগঠনটি বর্তমানে করোনা ভাইরাস প্রতিরোধে কাজ করছে।
করোনাকালে অসহায়দের কাছ সরাসরি সাহায্য সহযোগিতা পৌঁছে দিচ্ছে এই সংগঠনটি। মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ তাদের মাধ্যমেই খাদ্য সহায়তা করেছেন। সংস্থাটি খাবার ও নিত্যপ্রয়াজনীয় সামগ্রী ক্রয় করে তা অসহায় পরিবারগুলোর ঘরে ঘরে পৌঁছে দিচ্ছে মাহমুদউল্লাহ রিয়াদের ‘উপহার’ হিসেবে।
সংগঠনটির সভাপতি মমিনুর রহমান প্লাবন বলেন, হঠাৎ করেই মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ ভাই আমাকে ফোন করেন,কথার মাঝে তিনি বলেন ‘আমিও কিছু সহযোগীতা করতে চাই’। আমি অনেকটা সারপ্রাইজড ই হইলাম। উনার অর্থায়নে ১৩৩ টা পরিবারকে আমরা বাজার পৌছিয়ে দিতে পেরেছি।
মাহমুদউল্লাহ রিয়াদের এ সহায়তা পাওয়া প্রতিটি পরিবার বেশ কয়েকদিনের খাবার হিসেবে পেয়ে বেশ খুশি। উপহার পাওয়া প্রত্যেক পরিবারই নিম্ন আয়ের।
করোনা ভাইরাস প্রাদুর্ভাবে বাংলাদেশের ক্রিকেটাররা বেশ কিছু প্রশংসনীয় উদ্যোগ গ্রহণ করেছেন। ইতোপূর্বে এক মাসের বেতনের অর্ধেক ত্রাণ তহবিলে দান করেছেন। করোনা মোকাবেলায় আর্থিক সহায়তা দেওয়ার জন্য তহবিল গঠন করে এগিয়ে এসেছেন বাংলাদেশের ২৭জন ক্রিকেটার। এই ২৭জন ক্রিকেটার তাদের এক মাসের বেতনের অর্ধেকটা দান করেন।
এমন সিদ্ধান্ত নেওয়ায় সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে নিজের ব্যক্তিগত অ্যাকাউন্ট থেকে তিন ফরম্যাটের অধিনায়ক মুমিনুল হক, তামিম ইকবাল ও মাহমুদউল্লাহ রিয়াদের প্রশংসাও করেছেন মাশরাফি বিন মুর্তজা।
দেশে এই মহামারির শুরুর দিক থেকেই জাতীয় দলের তারকা ক্রিকেটার মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখার কথা বলেছেন।
বাংলাদেশ দলের টি-টোয়েন্টি অধিনায়ক মাহমুদউল্লাহ ফেসবুকে এক ভিডিও বার্তায় বলেছেন, আমাদের ডাক্তার, নার্সরা এবং যারা চিকিৎসাসেবায় নিয়োজিত আছেন সবাইকে আন্তরিকভাবে ধন্যবাদ। এ দুঃসময়ে করোনার মতো মহামারী ব্যাধির সময় তারা যেভাবে এগিয়ে এসেছেন, দেশকে সেবা দিচ্ছেন সেজন্য মন থেকে আপনাদের আন্তরিক ধন্যবাদ জানাচ্ছি।
রিয়াদ আরও বলেছেন, আমাদের মধ্যে হয়তো অবসাদ চলে আসতে পারে। একটু একঘেয়েমি অনুভব হতে পারে। মাথায় আসতে পারে একটু বাসার নিচে যাই। কয়েকজনের সঙ্গে কথা বলি বা বাসার সামনের মোড় থেকে একটু হেঁটে আসি। যদি কারও মাথায় কিংবা মনে এরকম চিন্তাধারা উঁকি দিয়ে থাকে সেগুলো যেন আমরা মাথা থেকে ঝেরে ফেলি।
তিনি বলেন, এখন সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে একত্রে কাজ করি। ইনশাআল্লাহ আমরা এ কঠিন সময়ে দ্রুত কাটিয়ে উঠব। ভালো সময় আমাদের থেকে খুব বেশি দূরে নয়, এটা আমি বিশ্বাস করি।