করোনার নমুনা সংগ্রহকারী একমাত্র টেকনোলজিস্ট নিজেই আক্রান্ত

প্রকাশিত: ৩:১৪ অপরাহ্ণ, জুন ৬, ২০২০

একমাত্র করোনার নমুনা সংগ্রহকারী মেডিকেল টেকনোলজিস্ট (ল্যাব) ময়মনসিংহের গফরগাঁও উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের মঞ্জরুল ইসলাম (৫০) টানা দুইমাস ৪৮১টি নমুনা সংগ্রহ করার পর কোভিড-১৯ এ আক্রান্ত হয়েছেন। একমাত্র নমুনা সংগ্রহকারী হওয়ায় বর্তমানে নমুনা সংগ্রহে লোকসংকট দেখা দিয়েছে।

 

উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স সূত্রে জানা গেছে, মেডিকেল টেকনোলজিস্ট (ল্যাব) পদে গফরগাঁও উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে তিনটি পদ থাকলে দুইজন দীর্ঘদিন ধরে ঢাকায় প্রেষণে কর্মরত। করোনাকালে গফরগাঁও উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের মেডিকেল টেকনোলজিস্ট ( ল্যাব ) মঞ্জরুল ইসলাম একাই উপজেলার সন্দেহভাজনদের নমুনা সংগ্রহ করছেন।

 

গত দুইদিন ধরে তার জ্বর ও সর্দি-কাশি হলে শুক্রবার সকালে নিজেই তার নমুনা সংগ্রহ করে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজের পিসিআর ল্যাবে পাঠান।

শুক্রবার সন্ধ্যায় ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজের পিসিআর ল্যাব থেকে জানানো হয়, গফরগাঁও উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের মেডিকেল টেকনোলজিস্ট (ল্যাব) মঞ্জরুল ইসলাম (৫০) করোনা পজেটিভ ।

 

এছাড়া শুক্রবার উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের স্বাস্থ্য সহকারী মৌসুমি আক্তার প্রীতি (২৬) করোনা পজেটিভ হয়েছেন। গফরগাঁও উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডাঃ মাইন উদ্দিন খাঁন মানিক বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন ।

মেডিকেল টেকনোলজিস্ট (ল্যাব) মঞ্জরুল ইসলাম বলেন, গত ২ এপ্রিল থেকে গত ১ জুন পর্যন্ত গফরগাঁও উপজেলার বিভিন্ন এলাকা থেকে সন্দেহভাজন ৪৮১ জনের নমুনা সংগ্রহ করেছি। মনের মধ্যে কোন দ্বিধা,ভয়-ভীতি ছিল না । গত আড়াই মাসে এক দিনের জন্যও ছুটি নিতে পারেনি। নিয়ম অনুযায়ী ১৪ দিন দায়িত্ব পালনের পর ১৪ দিন হোম কোয়ারেন্টাইনে থাকার কথা। কাজের চাপে সে সুযোগও পাইনি।

 

উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. মাইন উদ্দিন খান মানিক বলেন, মেডিকেল টেকনোলজিস্ট (ল্যাব) মঞ্জরুল ইসলাম একাই ৪৮১টি নমুনা টানা সেবা দিয়ে গেছেন। তিনি সত্যিকারের একজন যোদ্ধা। তার দ্রুত সুস্থতা কামনা করি।

তিনি আরও বলেন, যে দুইজন প্রেষণে আছে তাদের প্রেষণ স্থগিত করে গফরগাঁওয়ে ফিরিয়ে আনার জন্য উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে অবগত করা হয়েছে। নমুনা দেওয়ার পর থেকেই আক্রান্ত নতুন দুইজন হোম কোয়ারান্টিনে রয়েছেন।

 

গফরগাঁও উপজেলায় এ পর্যন্ত ৩৩ জন করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন । সুস্থ্য হয়ে ছাড়পত্র নিয়ে বাড়ি ফিরেছেন ২৮ জন ।